গরম মসলার গুঁড়া তৈরির সম্পূর্ণ রেসিপি

গরম মসলার গুঁড়া

আপনার রান্নায় ম্যাজিক আনতে চান? তাহলে আজই তৈরি করে নিন নিজের হাতে বানানো বিশেষ গরম মসলার গুঁড়া। এই গুঁড়া যেকোনো তরকারি, পোলাও বা বিরিয়ানিতে যোগ করবে এক অসাধারণ স্বাদ ও সুগন্ধ। বাজারের কেনা মসলায় অনেক সময় ভেজাল থাকে বা টাটকা সুবাস পাওয়া যায় না। তাই ঘরে তৈরি এই মসলা শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, এর প্রতিটি দানা আপনার রান্নার স্বাদকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে। আজ আমরা ধাপে ধাপে শিখব কীভাবে খুব সহজে এই স্পেশাল গরম মসলা তৈরি করা যায়।

উপকরণ

উপকরণগুলো যদি পরিমাপ করে নেওয়া হয়, তাহলে মসলার স্বাদ নিখুঁত হবে।

  • ছোট সবুজ এলাচ : ২ টেবিল চামচ
  • বড় এলাচ : ৬-৭টি
  • দারুচিনি : ২-৩টি মাঝারি আকারের টুকরা
  • জয়ফল : ১টি ছোট আকারের
  • জয়ত্রী : ২ টুকরা
  • লবঙ্গ : আধা টেবিল চামচ
  • তেজপাতা : ৫-৬টি
  • সাদা গোলমরিচ : আধা চা চামচ
  • স্টার মসলা : ২টি
  • মৌরি : ১ টেবিল চামচ
  • আস্ত ধনিয়া : ৩ টেবিল চামচ
  • জিরা : ৩ টেবিল চামচ
  • শাহী জিরা : ১ টেবিল চামচ
  • কালো গোলমরিচ : ১ চা চামচ
  • শুকনা মরিচ : ৪টি ( সুন্দর রঙের জন্য)

প্রস্তুত প্রণালি

এই বিশেষ গরম মসলা তৈরির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হবে, যাতে মসলার সুবাস ও স্বাদ পুরোপুরি অক্ষুণ্ন থাকে।

১. মসলা বাছাই ও শুকানো :

প্রথমে সবগুলো মসলা পরিষ্কার করে বেছে নিন। কোনো অপরিষ্কার বা পোকা লাগা দানা থাকলে তা ফেলে দিন। এবার একটি বড় প্লেটে সব মসলাগুলো ছড়িয়ে নিন। মসলাগুলো ভালোভাবে শুকানো খুবই জরুরি, যাতে গুঁড়া করার সময় কোনো আঠালো ভাব না থাকে এবং অনেক দিন ভালো থাকে।

  • রোদে শুকানো : সবচেয়ে ভালো উপায় হলো মসলাগুলো ২ থেকে ৩ ঘণ্টা কড়া রোদে শুকিয়ে নেওয়া। এতে মসলার প্রাকৃতিক তেলগুলো আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং গুঁড়া করলে অসাধারণ সুগন্ধ বের হয়।
  • চুলায় হালকা গরম করা : যদি রোদ না থাকে, তাহলে একটি পরিষ্কার ও শুকনো ফ্রাইপ্যান হালকা আঁচে গরম করুন। ভারী মসলা যেমন দারুচিনি, বড় এলাচ, জয়ফল প্রথমে দিয়ে ১-২ মিনিট ভেজে নিন। এরপর বাকি মসলাগুলো যেমন জিরা, ধনিয়া, মৌরি, লবঙ্গ ইত্যাদি দিয়ে আরও ১-২ মিনিট হালকা ভেজে নিন। খেয়াল রাখবেন, মসলাগুলো যেন পুড়ে না যায়, শুধু মচমচে হয়। শুকনা মরিচ দিলে তা আলাদা করে ভেজে নেবেন, এতে এর রঙ সুন্দর হবে।
২. মসলা গুঁড়া করা :

মসলাগুলো পুরোপুরি ঠাণ্ডা হলে একটি মসলা গ্রাইন্ডার বা মিক্সারের জারে দিয়ে দিন। মসলাগুলো একবারে গুঁড়া না করে অল্প অল্প করে গুঁড়া করুন। প্রথমে মাঝারি গতিতে গুঁড়া করে নিন, তারপর মসৃণ গুঁড়া হওয়ার জন্য উচ্চ গতিতে গ্রাইন্ড করুন। যদি গ্রাইন্ডার না থাকে, তাহলে মসলা ছেঁচার পাটাতেও গুঁড়া করতে পারেন, যদিও তাতে কিছুটা সময় বেশি লাগবে।

৩. সংরক্ষণ :

মসলার গুঁড়া পুরোপুরি ঠাণ্ডা হলে একটি বায়ুরোধী কাঁচের পাত্রে ভরে রাখুন।

  • সাধারণ তাপমাত্রায় : এই গুঁড়া ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ভালো থাকে।
  • ফ্রিজে সংরক্ষণ : চাইলে মসলার গুঁড়া একটি এয়ারটাইট পাত্রে ফ্রিজেও রাখতে পারেন। এতে এটি আরও বেশি দিন টাটকা থাকবে। তবে খেয়াল রাখবেন, মাঝে মাঝে পাত্রটি বের করে রোদে দিলে মসলার সুবাস ও কার্যকারিতা ভালো থাকে।

এই মসলা মাংস, সবজি, পোলাও বা বিরিয়ানির মতো যেকোনো রান্নায় অল্প পরিমাণে ব্যবহার করলেই তা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে। নিজের হাতে বানানো এই মসলার সুগন্ধ আপনাকে মুগ্ধ করবেই!